‘না’ কথাটা শুনতে-শুনতে জীবনটাই অতিষ্ট অনেকের। অথচ ‘
নেতিবাচককে ইতিবাচকে বদলে দিন ! 
না’ শব্দটাকে হ্যাঁতে পরিণত না করা পর্যন্ত আটকে থাকে অনেক কাজ। তাই নেতিবাচককে ইতিবাচকে বদলে দেয়ার কায়দা রপ্ত করতে পারলে অনেক কঠিন কাজও সহজ হয়ে যেতে পারে।
 
আর ক’দিন পর স্কুল-কলেজে শুরু হবে গরমের ছুটি। ছোটবেলার কথা যাদের মনে আছে, তারা নিশ্চয়ই স্মরণ করতে পারবেন, এই ছুটির দিনগুলোয় আমাদের অধিকাংশ আর্জিই খারিজ হয়ে যেত। যেমন- আমি কি আইসক্রিম খেতে পারি? উত্তর: না। ‘দুপুরে বন্ধুর বাড়ি যাবো?’ উত্তর: ‘না’। ‘ক্রিকেট ম্যাচ দেখে একটু রাত করে বাড়ি ফিরি?’ এবারো উত্তর- ‘না’। একটা আন্তর্জাতিক সমীক্ষা বলছে ছোটদের বিশেষ করে পাঁচ থেকে আট বছর বয়সীদের জীবনে সব থেকে বেশিবার ‘না’ কথাটা শুনতে হয়। গড়ে বছরে প্রায় চল্লিশ হাজারবার। মানে দিনে কমকরে হলেও একশোবার। 
 
শৈশবের সেই দিনগুলো কেটে গেলেও ‘না’ এর বহর এখনো আমাদের পিছনে লেগে আছে। হয়তো সংখ্যায় একটু কমেছে, কিন্তু আছে, এবং বেশ ভালোভাবেই আছে। যেমন না শুনতে হয় ঘরে বউয়ের কাছে, তেমনি বাইরে ‘না’ শুনতে হয় বন্ধু-বান্ধব বা অফিসে বসের কাছে। অর্থাৎ স্কুল কলেজের পাঠ চুকিয়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করলেও শান্তি নেই। আগের মতোই ‘না’ আমাদের তাড়া করে বেড়াচ্ছে রীতিমতো।
 
যদিও তফাত হলো, ছোটবেলার ‘না’ এর জেরে আপনার হয়তো দিনান্তে আইসক্রিমটা বাদ পড়তো, কিন্তু এখন ‘না’ এর জেরে রুজিরুটিতে টান পড়তে পারে। কিংবা কেরিয়ারে বড়সড় প্রভাব পড়তে পারে। তাই শৈশবের ‘না’ এর থেকে এখনকার ‘না’ গুলো নিয়ে বেশি করে সতর্ক থাকতে হবে। চেষ্টা করতে হবে এই ‘না’ এর দলকে যাতে ‘হ্যাঁ’তে পরিণত করা যায়।
 
তবে ‘না’কে ‘হ্যাঁ’তে রূপান্তরিত করতে কিছু কিছু জিনিস অবশ্যই মনে রাখতে হবে। যেমন-
 
ইতিবাচক বাচনভঙ্গি: কথার মধ্যেই যদি উত্তরে ‘না’ বলার বীজ লুকিয়ে থাকে, তাহলে বিসমিল্লায় গলদ। আপনার ‘হ্যাঁ’ উত্তর পাওয়ার সম্ভাবনাটাও ক্ষীণ হতে থাকবে। বদলে প্রশ্নটাই করুন এমনভাবে যাতে উত্তরে ‘না’ বলার ব্যাপারটা সহজ না থাকে৷ যেমন- ‘আপনাকে এই ফাইলটা দেখতে দিতে পারি?’ উত্তরে আপনার সহকর্মী সহজেই ‘না’ বলে দিতে পারেন। বদলে প্রস্তাবটা এইভাবে করতে পারেন- ‘তিনটে ফাইল আছে, চলুন আমরা দুজনে শেয়ার করে কাজটা মিটিয়ে ফেলি’।
 
সময় দিতে হবে: কথায় আছে সবুরে মেওয়া ফলে। আপনি কোনো কাজ যদি তৎক্ষণাত্ হাসিল করে ফেলার সুযোগে থাকেন, তাহলে ‘না’ এর ধারাবর্ষণ হওয়ার আশঙ্কাটা বেশি। হয়তো কোনো প্রজেক্ট নিয়ে বেশ চাপে আছেন। চাইছেন আপনার সহকর্মীরা আপনাকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিক। এবার আপনি যদি ঘোড়ায় জিন চাপিয়ে সবাইকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিতে চান, তাহলে সমস্যা হতে পারে। প্রত্যেকেরই নিজের নিজের কাজ আছে, সেগুলো গুছিয়ে নেয়ার সময় দিন। তারপর সহকর্মীদের কেউ কেউ নিশ্চয়ই সাহায্য করবেন আপনাকে। আর একটু ধের্য্য না ধরলে সহযোগিতা পাবেন না।
 
ইতিবাচক দিকটা তুলে ধরুন সাধারণত যে কোনো ব্যাপারেই ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দুটো দিক থাকে। কোনো প্রশ্নের উত্তরে ‘না’ আসে এই নেতিবাচক দিকের কথা ভেবেই। তাই আপনি যদি আপনার প্রশ্নের মধ্যে বা বক্তব্যে ইতিবাচক দিকটি বেশি করে রাখতে পারেন। তাহলে অনেক ক্ষেত্রেই দেখবেনেউত্তরে ‘হ্যাঁ’ মেলার সম্ভাবনা থাকছে।

Kindly Share This Post »»

0 comments :

Post a Comment